তারেককে চার মার্চ আদালতে হাজিরের নির্দেশ

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৫ সময়ঃ ১২:৪৩ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:১২ অপরাহ্ণ

আদালত প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডট কম

তারেক4136998416327825_nজিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা দুই দুর্নীতি মামলার আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে পরবর্তী ধার্য দিন আগামী ৪ মার্চ হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়াকে এ আদেশ দেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের আদালত।

রাজধানীর বকশিবাজারে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদের অসমাপ্ত সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ আদেশ দেন বিচারক। কোনো আসামি না থাকায় প্রথম সাক্ষীকে আসামিপক্ষের জেরা বাতিল করে আগামী ৪ মার্চ দ্বিতীয় সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।

দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ মামলার আসামি তারেক রহমানকে হাজির করানোর আবেদন জানান। তিনি বলেন, অসুস্থতাজনিত কারণ দেখিয়ে চিকিৎসার কথা বলে জামিন নিয়ে বিদেশে গিয়েছিলেন তারেক রহমান। এখন তিনি সুস্থ আছেন বলে আমরা জেনেছি। তাই মামলার বিচারিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে তাকে আদালতে হাজির করানো প্রয়োজন।

এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়াকে আগামী ধার্য তারিখে (৪ মার্চ) অবশ্যই তারেক রহমানকে হাজির করানোর আদেশ দেন আদালত।

এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের দুই দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ ৩ আসামির জামিন বাতিল ও তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে সাক্ষ্য শুরুর আদেশ দেন আদালত। অন্য দুই আসামি হচ্ছেন মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।

এরপর বেলা ১০টা ৫০ মিনিট থেকে ১২টা ১০ মিনিট পর্যন্ত সাক্ষ্য দেওয়া শেষ করেন হারুন-অর রশিদ, যিনি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলারও বাদী ও প্রথম সাক্ষী।

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আদালতে হাজির না হয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাতে আইনজীবীদের মাধ্যমে দু’টি সময়ের আবেদন জানান। বেলা পৌনে এগারটার দিকে এসব আবেদনের শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে দুই আবেদন নামঞ্জুর করে তার এবং দীর্ঘদিন আদালতে হাজির না হওয়ায় অন্য দু’জনের জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

আদালত তার আদেশে বলেন, গত ধার্য তারিখে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বুধবার তাকে অবশ্যই হাজির করাবেন বলে জানিয়েছিলেন। জামিনদাররা সে কথা না রাখেননি। এছাড়া মামলা দু’টির ৬৩টি ধার্য তারিখে তিনি মাত্র ৭ বার আদালতে হাজির হয়েছেন।

অন্যদিকে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ খান।

মামলাটির অভিযোগে বলা হয়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত ১ কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি।

জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ খান।

এ মামলায় অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান জামিনে আছেন। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

গত বছরের ১৯ মার্চ দুই দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ঢাকা তৃতীয় ও বিশেষ জজ আদালতের আগের বিচারক বাসুদেব রায়। খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে চার্জ গঠন করা হয় খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর আট আসামির বিরুদ্ধেও।

গত বছরের ৭ মে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত বিশেষ মামলা ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্ত বিশেষ মামলার বিচারিক কার্যক্রম ঢাকার মেট্রোপলিটন দায়রা জজ আদালত ভবনের পরিবর্তে ঢাকা মহানগরের বকশীবাজার এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে নির্মিত অস্থায়ী আদালতভবনে চালানোর আদেশ জারি করে।

প্রতিক্ষণ/এডি/নয়ণ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G